পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে
আবেদনকারীর বয়স ১৮ বছরের নিচে হলে ১৭-ডিজিটের অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ; খ) আবেদনকারীর বয়স ১৮-২০ বছর হলে জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা ১৭-ডিজিটের অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ; গ) আবেদনকারীর বয়স ২০ বছরের বেশি হলে জাতীয় পরিচয়পত্র, তবে বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনে আবেদনের ক্ষেত্রে ১৭-ডিজিটের অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ গ্রহণযোগ্য হবে।
বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করবেন অথচ জানেন না বাংলাদেশে পাসপোর্ট করতে গেলে কি কি কাগজ লাগে? জেনে নিন নতুন ৫ বা ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে তাও ২০২৪ সালে।
বর্তমানে পুরনো MRP পাসপোর্ট এর পরিবর্তে ই পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়। আর আপনি চাইলেও এখন আর এমআরপি পাসপোর্ট তৈরি করতে পারবেন না, পাসপোর্ট রিনিউ কিংবা নতুন করে ইস্যু করার ক্ষেত্রে আপনাকে ই পাসপোর্ট দেওয়া হবে।
এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে সর্বপ্রথম বাংলাদেশে ই পাসপোর্ট সেবা চালু হয়। বর্তমানে দালাল ছাড়া অনলাইন এর মাধ্যমে আপনারা পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। ভোটার আইডি কার্ড কিংবা জন্ম নিবন্ধন সনদ দিয়ে সহজেই পাসপোর্ট আবেদন করা সম্ভব। সাধারণত পাসপোর্টের ধরন অনুযায়ী ডকুমেন্ট ভিন্ন হয়। তাই বিভিন্ন ধরনের পাসপোর্ট করতে আলাদা আলাদা কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন হবে তা জানানো হবে এই লেখাটির মাধ্যমে।
পাসপোর্ট এর ধরন সমূহ
শিশুদের পাসপোর্ট।
প্রাপ্তবয়স্কদের পাসপোর্ট।
সরকারি চাকরিজীবীদের পাসপোর্ট।
আবেদনকারীর বয়স হিসেবে পাসপোর্ট এর ধরন ভিন্ন হয়। তাছাড়া সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সরকারি কাজে বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ডকুমেন্টস হিসেবে NOC এবং GO প্রয়োজন হয়। এই ধরনের পাসপোর্টকে Government Order পাসপোর্ট বলা হয়।
পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে
ই পাসপোর্ট করতে হলে প্রথমত আপনাকে আবেদন করতে হবে, ৫ বছর কিংবা ১০ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয় পত্র প্রয়োজন হয়। এবং যাদের বয়স ২০ বছরের নিচে, তাদের অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রয়োজন হবে। এছাড়াও পিতা মাতার আইডি কার্ড সহ নাগরিক সনদপত্র প্রয়োজন হবে।
পেশা প্রমান এর জন্য স্টুডেন্ট হলে শিক্ষাকার্ড এবং চাকরিজীবী হলে চাকরির কার্ড প্রয়োজন। সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য NOC এবং GO প্রয়োজন। অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদন ফি পরিশোধ করে, চালান রশিদ ও 3R Size এর ছবি প্রয়োজন হবে।
সাধারণত আমরা পাসপোর্ট আবেদনের ভিত্তিকে ৩ ভাগে ভাগ করতে পারি। শিশুদের পাসপোর্ট, প্রাপ্তবয়স্কদের পাসপোর্ট ও সরকারি চাকরিজীবীদের পাসপোর্ট। বয়স ভেদে পাসপোর্ট এর আবেদনের ক্ষেত্রে আলাদা ডকুমেন্টস প্রয়োজন হয়। চলুন এই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
শিশুদের পাসপোর্ট এর আবেদনের জন্য ডকুমেন্টস
- শিশুর অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ
- গার্ডিয়ান হিসেবে পিতা-মাতার ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি ( বাধ্যতামুলক)
- অনলাইন আবেদন সারাংশ
- অনলাইন আবেদনের কপি
- আবেদন ফি ব্যাংক ড্রাফ্ট করে এ চালানের কপি
- টিকা কার্ড (প্রয়োজনের ক্ষেত্রে)
- 3R Size Photo ( Must Have)
শিশুদের পাসপোর্ট আবেদন করতে অবশ্যই পিতা-মাতার ভোটার আইডি কার্ডের কপি অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র প্রয়োজন হবে। যেহেতু শিশুর (২০ বছরের নিচে) ভোটার আইডি কার্ড নেই, সেহেতু অবশ্যই গার্ডিয়ানের ডকুমেন্টস প্রয়োজন।
তবে ১৮ বছরের উপরে যাদের ভোটার আইডি কার্ড আছে, তারা গার্ডিয়ানের ডকুমেন্টস ব্যতীত পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবে। সাধারণত তাদেরকে প্রাপ্তবয়স্ক ক্যাটাগরির মধ্যে বিবেচনা করা হয়।
প্রাপ্তবয়স্কদের পাসপোর্ট আবেদনের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস
- জাতীয় পরিচয় পত্র তথা NID কার্ডের কপি
- ইউনিয়ন অথবা পৌরসভার চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রাপ্ত নাগরিক সনদপত্র
- ইউটিলিটি বিলের কাগজ
- অনলাইন আবেদন সারাংশ ( summary)
- অনলাইন আবেদনের কপি ( 3 pages copy)
- আবেদন ফি ব্যাংক ড্রাফ্ট করে এ চালানের কপি
- আবেদনকারী স্টুডেন্ট হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রাপ্ত স্টুডেন্ট কার্ড। অথবা সার্টিফিকেট
- পিতা মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি ( অপশনাল)
- বিবাহিত হলে নিকাহনামা
সাধারণত যাদের ভোটার আইডি কার্ড আছে তাদেরকে প্রাপ্তবয়স্কদের তালিকায় ধরা হয়। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে অবশ্যই জাতীয় পরিচয় পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড প্রয়োজন হবে। তাছাড়া প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে গার্ডিয়ানের ডকুমেন্টস প্রয়োজন নেই।
সরকারি চাকরিজীবীদের পাসপোর্ট আবেদনের ডকুমেন্টস
- আবেদনকারীর ভোটার আইডি কার্ডের কপি
- নাগরিক সনদপত্র
- ইউটিলিটি বিলের কাগজ
- অনলাইনে আবেদন সারাংশ (Summary)
- আবেদনের পরে অনলাইন আবেদনের কপি
- বিবাহিত হলে নিকাহনামা
- পিতা মাতার এনআইডি ( অপশনাল)
- NOC (No Objection Certificate)
- বা GO (Government Order)
সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে সাধারণ নাগরিকের থেকে (NOC ও GO) এই ২টি ডকুমেন্ট বেশি প্রয়োজন হবে। যারা রাষ্ট্রীয় কাজে সরকারি আদেশে দ্রুত দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট এর আবেদন করবে, তাদের ক্ষেত্রে GO (Government Order) প্রয়োজন।
এবং সরকারি কর্মকর্তারা বিদেশ ভ্রমণের জন্য পাসপোর্ট এর আবেদন করলে, তার মন্ত্রণালয় কিংবা অভিদপ্তর থেকে NOC (No Objection Certificate) ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে জমা দিতে হবে। এই ডকুমেন্টগুলো ব্যতীত সরকারি চাকরিজীবীদের অন্য কোন ডকুমেন্টস প্রয়োজন নেই।
পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে
- ৫ বছরের জন্য ৪৮ পেইজের পাসপোর্ট, রেগুলার ডেলিভারি ফি ৪০২৫ টাকা, জরুরী ডেলিভারি ফি ৬৩২৫ টাক এবং অতিব জরুরী ডেলিভারি ফি ৮৬২৫ টাকা।
- ৫ বছরের জন্য ৬৪ পেইজের পাসপোর্ট– রেগুলার ডেলিভারি ফি ৬৩২৫ টাকা, জরুরী ফি ডেলিভারি ৮৬২৫ টাকা এবং অতিব জরুরী ডেলিভারি ফি ১২০৭৫ টাকা।
- ১০ বছরের জন্য ৪৮ পেইজের পাসপোর্ট– রেগুলার ডেলিভারি ফি ৫৭৫০ টাকা, জরুরী ডেলিভারি ফি ৮০৫০ টাকা এবং অতিব জরুরী ডেলিভারি ফি ১০৩৫০ টাকা।
- ১০ বছরের জন্য ৬৪ পেইজের পাসপোর্ট– রেগুলার ডেলিভারি ফি ৮০৫০ টাকা, জরুরী ডেলিভারি ফি ১০৩৫০ টাকা এবং অতিব জরুরী ডেলিভারি ফি ১৩৮০০ টাকা।
বিশেষ দ্রষ্টব্য
সরকারি চাকরিজীবীদের পাসপোর্ট এবং প্রাপ্তবয়স্কদের পাসপোর্টে Spouse Name যুক্ত করতে চাইলে অবশ্যই স্বামী/ স্ত্রীর NID কার্ড ও কাবিন নামা প্রয়োজন হবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url